ধরা যাক, S আলোক উৎস থেকে চারদিকে আলোক তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে [চিত্র ৭.৪ ]। কোনো এক সময় AB হচ্ছে তরঙ্গমুখের অবস্থান। এখন সময়ের সাথে সাথে তরঙ্গমুখ সামনের দিকে অগ্রসর হয়। t সময় পরে তরঙ্গমুখের অবস্থান কোথায় হবে তা হাইগেন্সের নীতির সাহায্যে নির্ণয় করা যায়। হাইগেনসের নীতি অনুযায়ী তরঙ্গমুখে অবস্থিত প্রত্যেকটি কণাকে গৌণ উৎস (secondary source) বলে ধরা হয় এবং ঐ কণাগুলো থেকে অণুতরঙ্গ বা গৌণতরঙ্গসমূহ (secondary waves) নির্গত হয়ে চারদিকে একই বেগে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং সেকেন্ড পরে তরঙ্গমুখের অবস্থান বের করার জন্য AB তরঙ্গমুখের ওপর P1, P2, P3 ইত্যাদি কণা নেওয়া হয়। এখন আলোর বেগ c হলে প্রত্যেক কণাকে কেন্দ্র করে ct ব্যাসার্ধের ছোট ছোট গোলক কল্পনা করা হয়। ঐ গোলকগুলোই হবে P1, P2 প্রভৃতি গৌণ উৎস থেকে সৃষ্ট গৌণ তরঙ্গের অবস্থান। তখন ঐ ছোট গোলকগুলোকে স্পর্শ করে যে গোলীয় তল A1 B1, পাওয়া যায় তাই হচ্ছে। সেকেন্ড পরে অগ্রসরমান তরঙ্গমুখের অবস্থান।
ধরা যাক, AF একটি সমতল তরঙ্গমুখ XY প্রতিফলক তলের উপর তির্যকভাবে আপতিত হয় [চিত্র ৭.৫। AF- এর ওপর অঙ্কিত লম্বগুলো আলোকরশ্মি নির্দেশ করে। এখন হাইগেনসের নীতি অনুসারে AF-এর উপরস্থ প্রত্যেকটি বিন্দু পর্যায়ক্রমে XY তলে পৌঁছে সুতরাং এগুলো গৌণ উৎসের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। ধরা যাক, আলোক তরঙ্গকে C বেগে F থেকে E-তে পৌঁছতে সেকেন্ড সময় লাগে। সুতরাং যে সময়ে আলোক তরঙ্গ F থেকে E-তে পৌঁছে সেই একই সময়ে A বিন্দু থেকে তরঙ্গ একই মাধ্যমে AB (= ct) দূরত্ব অতিক্রম করে। এখন A-কে কেন্দ্র করে EF(=ct) এর সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্তাংশ অঙ্কন করে E থেকে বৃত্তাংশের উপর EB স্পর্শক টানা হয়। তাহলে EB হবে AF-এর প্রতিফলিত তরঙ্গমুখ। AEB ও EFA সমকোণী ত্রিভুজদ্বয়ে AB =FE =ct এবং AE সাধারণ বাহু
:- ত্রিভুজদ্বর সর্বসম ।
সুতরাং <AEB = <EAF.. (7.4)
এখন A বিন্দুতে XY তলের ওপর NA লম্ব টানা হয় ।
সুতরাং <CAN + <NAF = <EAF + <NAF = এক সমকোণ।
:- <CAN = <EAF = i (আপতন কোণ)
আবার, <BAN + <BAE = <AEB + <BAE = এক সমকোণ।
:. <BAN = <AEB = (প্রতিফলন কোণ)
( 7.4) সমীকরণ থেকে <CAN = <AEB = <BAN
অর্থাৎ আপতন কোণ (i) = প্রতিফলন কোণ (r) ।... (7.5)
আবার আপতিত রশ্মি CA অভিলম্ব AN এবং প্রতিফলিত রশ্মি AB একই সমতলে অবস্থিত। সুতরাং হাইগেন্সের নীতির সাহায্যে প্রতিফলনের সূত্র প্রতিপাদিত হলো।
আবার যেহেতু আপতিত রশ্মি, অভিলম্ব ও প্রতিফলিত রশ্মি কাগজের তলে অর্থাৎ একই সমতলে অবস্থান করে, সুতরাং প্রতিফলনের প্রথম সূত্রটিও প্রতিষ্ঠিত হয়।
ধরা যাক, XY হচ্ছে a ও b দুটি স্বচ্ছ মাধ্যমের বিভেদতল। ধরা যাক, AB একটি সমতল তরঙ্গমুখ a মাধ্যমে EA অভিমুখে c বেগে চলছে। তরঙ্গমুখটি যখন X Y বিভেদতলের A বিন্দুতে তির্যকভাবে পৌঁছে তখন সেখানকার ইথার কণাগুলো আন্দোলিত হয়। হাইগেন্সের নীতি অনুযায়ী সেগুলো গৌণ উৎস হিসেবে কাজ করে এবং তা থেকে উৎপন্ন গৌণ তরঙ্গ b মাধ্যমে প্রবেশ করে পরিবর্তিত বেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে [চিত্র ৭.৬)। এখন t সময়ে আলোক তরঙ্গ B থেকে একই মাধ্যমে a তে C বিন্দুতে পৌঁছে। সুতরাং BC = c1t । এই একই সময়ে A থেকে আলোক রশ্মি b মাধ্যমে D-তে পৌঁছলে AD = c2t হয়। এখানে C2 হলো b মাধ্যমে আলোর বেগ । এখন A কে কেন্দ্র করে c2t সমান ব্যাসার্ধের বৃত্তচাপ অঙ্কন করে C থেকে CD স্পর্শক টানলে তা প্রতিসরিত তরঙ্গমুখ নির্দেশ করে যা AG বরাবর অগ্রসর হয়। সুতরাং CD তরঙ্গমুখের ওপর লম্ব AG প্রতিসরিত রশ্মি এবং EA আপতিত রশ্মি নির্দেশ করে।
এখন আপতিত তরঙ্গমুখ AB ও প্রতিসরিত তরঙ্গমুখ CD প্রতিসরণ তল XY-এর সাথে যথাক্রমে <BAC এবং <ACD উৎপন্ন করে।
এখন EA, AB তলের উপর এবং NA, AC তলের ওপর লম্ব। সুতরাং <EAN + <NAB = <BAC +<NAB = এক সমকোণ।
.. <EAN = <BAC = i (আপতন কোণ) আবার, <DAN' + <DAC = <ACD + <DAC = এক সমকোণ
:. <DAN' = <ACD = r (প্রতিসরণ কোণ)।
.: AN' ও AD যথাক্রমে AC ও DC-এর ওপর লম্ব।
এখন,
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mfrac><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>i</mi></mrow><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>r</mi></mrow></mfrac><mo>=</mo><mfrac><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>E</mi><mi>A</mi><mi>N</mi></mrow><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>D</mi><mi>A</mi><mi>N</mi><mo>'</mo></mrow></mfrac><mspace linebreak="newline"/><mo>=</mo><mfrac><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>B</mi><mi>A</mi><mi>C</mi></mrow><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>A</mi><mi>C</mi><mi>D</mi></mrow></mfrac><mo>=</mo><mfrac><mrow><mi>B</mi><mi>C</mi></mrow><mrow><mi>A</mi><mi>C</mi></mrow></mfrac><mo>÷</mo><mfrac><mrow><mi>A</mi><mi>D</mi></mrow><mrow><mi>A</mi><mi>C</mi></mrow></mfrac><mspace linebreak="newline"/><mo>=</mo><mfrac><mrow><mi>B</mi><mi>C</mi></mrow><mrow><mi>A</mi><mi>D</mi></mrow></mfrac><mo>=</mo><mfrac><mrow><msub><mi>c</mi><mn>1</mn></msub><mi>t</mi></mrow><mrow><msub><mi>c</mi><mn>2</mn></msub><mi>t</mi></mrow></mfrac><mo>=</mo><mfrac><mrow><msub><mi>c</mi><mn>1</mn></msub></mrow><mrow><msub><mi>c</mi><mn>2</mn></msub></mrow></mfrac><mspace linebreak="newline"/><mfrac><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>i</mi></mrow><mrow><mi>s</mi><mi>i</mi><mi>n</mi><mo> </mo><mi>r</mi></mrow></mfrac><mo>=</mo><mfrac><mrow><msub><mi>c</mi><mi>a</mi></msub></mrow><mrow><msub><mi>c</mi><mi>b</mi></msub></mrow></mfrac><mo>=</mo><mi>a</mi><msub><mi>μ</mi><mi>b</mi></msub></math>…(7.6)
এটি প্রতিসরণ সংক্রান্ত স্নেলের সূত্র বা প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্র।
আবার যেহেতু আপতিত রশ্মি, অভিলম্ব ও প্রতিসৃত রশ্মি কাগজের তলে অর্থাৎ একই সমতলে অবস্থান করে, সুতরাং প্রতিসরণের প্রথম সূত্রটিও প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও দেখুন...